কওমি মাদ্রাসার ইতিহাস | History of Qawmi Madrasa

কওমি মাদ্রাসার ইতিহাস

১৮৬৬ সালে ভারতে উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দ নামক স্থানে দারুল উলুম দেওবন্দ নামে সর্বপ্রথম একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। দেওবন্দ মাদ্রাসা কওমী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। আজকে আমরা কওমি মাদ্রাসার ইতিহাস, সমাজে কওমি মাদ্রাসার অবদান সম্পর্কে জানবো। পাশাপাশি পাঠশালা সফট কিভাবে কওমি মাদ্রাসার আধুনিকায়নে ভূমিকা রাখতে পারে সার্থকতা আলোচনা করব।

কওমি মাদ্রাসার ইতিহাস

পুরো ভারত বর্ষ জুড়ে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয় ১৮৫৭ সালে। ব্রিটিশরা কার্যত ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর মাধ্যমে উপমহাদেশে রাজত্ব চালাচ্ছিল। যদিও ব্রিটিশ রাজ্য .১৮৫৭ সালের আগ পর্যন্ত সরাসরিভাবে উপমহাদেশের উপর নিজেদের শাসন প্রতিষ্ঠা করে নি। বরং তারা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নাম দিয়ে তাদের শাসন চালাতে থাকে।

তাদের জুলুম অত্যাচার নির্যাতন নির্যাতন এর বিবরণ গুলো ছিল লোমহর্ষক। শাসন চালানো সেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল কিভাবে উপমহাদেশের মানুষের কে আরো বেশি শোষণ করা যায়। শোষণ করে এদের কাছ থেকে কিভাবে আরও বেশি টাকা কামানো যায় এটার জন্য তারা অনেক রকম কাজ করত।

জোর করে কৃষকদের নীলচাষে বাধ্য করা বা নির্দিষ্ট মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য করা ছিল অতি সাধারণ। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবস্থা ছিল ভয়ানক। যেহেতু ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মূল লক্ষ্য ছিল উপমহাদেশ শোষণ করা তাই তারা আইন-কানুন প্রতিষ্ঠা করার দিকে মনোযোগ দেয়নি।

সাধারণমানুষ-এর বলা যায় কোন নিরাপত্তায় ছিলনা। যদিও মুঘল শাসকদের আনুষ্ঠানিকভাবে তখনও উৎখাত করা হয়নি তবুও তাদের কোনো ক্ষমতা ছিল না বললেই চলে। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজত্ব প্রতিষ্ঠা রাত পর্যন্ত উপমহাদেশে বেশিরভাগ অঞ্চল মুসলমানের শাসন করতো।

ব্রিটিশরা মুসলমানদেরকে ক্ষমতার গদি থেকে সরালে তারা বিশেষভাবে বঞ্চিত অনুভব করে। ডিভাইড এন্ড রুল পলিসি নামক বিশেষ এক পলিসি তৈরি করে ব্রিটিশরা। এই পলিসি তৈরি করার ফলে তারা হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে সামাজিক বিভেদ তৈরি করতে সক্ষম হয়।

ডিভাইড এন্ড রুল পলিসি কে প্রথম দিকে তারা হিন্দুদেরকে সমাজের কিছু কিছু জায়গায় অনেক ক্ষমতা দেয়। যেমন জমিদারিতে অনেক হিন্দুদের কে প্রতিষ্ঠা করে। হিন্দুদের প্রতি ব্রিটিশরা এ বার্তা দিতে চেয়েছিল যে তোমরা যদি আমাদের সাথে থাকতো তাহলে আমরা তোমাদেরকে ক্ষমতায় শরীক করব।

ফলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রথমদিকে অনেক হিন্দু রাজা এবং হিন্দু প্রজা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে সমর্থন দেয়। কিন্তু খুব শীঘ্রই হিন্দুসহ সবাই দেখতে পায় ব্রিটিশদের মূল লক্ষ্য শুধু শোষণ করা। যেমন যেই চাষীদের উপর নীল চাষে বাধ্য করা হলো তারা ছিল সবাই সাধারন প্রজা।

হিন্দু-মুসলমানের কোন ভেদাভেদ ছিলনা ব্রিটিশদের কাছে শোষণের দিক থেকে। ব্রিটিশদের কাছে তারা ছিল শুধুই শোষণের হাতিয়ার। যেমন শুধু ব্রিটিশদের ফ্যাক্টরি চালানোর জন্য তারা অনেক চাষীদেরকে নীলচাষে বাধ্য করতো যার ফলে অনেক নীলচাষীদের জুলুম এর শিকার হতে হত।

এছাড়াও ব্রিটিশদের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার ফলে এই অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সংঘটিত হয়। ধীরে ধীরে সাধারন জনগন প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। এর ফলাফল দেখা যায় ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহে।

সিপাহী বিদ্রোহের মূলত ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সিপাহীরা অংশগ্রহণ করে। মুসলমান জনসাধারণের সিপাহী বিদ্রোহের প্রতি আগ্রহ এবং সমর্থন ছিল অসামান্য। কারণ ব্রিটিশদের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন কালে মুসলমানের সবচাইতে বেশি বঞ্চিত হয়েছে।

মুঘলদের শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের এই বিপ্লবের প্রতি সমর্থন ছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে এই বিপ্লব ব্যর্থ হয়। ব্রিটিশরা অত্যন্ত নির্মমতা এবং চাতুরতার সাথে বিদ্রোহ দমন করে।

এই বিদ্রোহ উপমহাদেশের বিশেষ করে মুসলমান জনসাধারণের মনে অনেক আশা আকাঙ্খার জন্ম দিয়েছিল। তারা ভেবেছিল যে এই বিদ্রোহের মাধ্যমে হয়তো তারা ব্রিটিশদের শোষণ নির্যাতন দমন থেকে মুক্তি পাবে। কিন্তু তা হয়নি। ফলে মুসলমান জনসাধারণ উদাস হয়ে পড়ে।

উপরন্তু আগে যে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর মাধ্যমে এদেশে পরোক্ষভাবে শাসনব্যবস্থা চালাত তা তারা বাতিল করে। তারা প্রত্যক্ষভাবে শাসন ব্যবস্থা নিজেদের হাতে নিয়ে নেয়।

পাশাপাশি মুসলমানদের ধর্মীয় বিধিবিধান পালনে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে থাকে ব্রিটিশদের বানানো বিভিন্ন নিয়ম কানুনের জন্য। এসকল সমস্যার কথা চিন্তা করে মুসলমানদের নবজাগরণের জন্য ১৮৬৬ সালে দেওবন্দ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়।

দেওবন মাদ্রাসা পুনরায় মুসলমানদের ইমান-আকিদা পুনরুজ্জীবনে কাজ করতে থাকে। সরাসরি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে না যেয়ে দেওবন্দ মাদ্রাসা কৌশলগতভাবে কাজ করে। তাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল যে মুসলমানদের ইমান-আকিদার সংরক্ষণ।

সমাজে কওমি মাদ্রাসার অবদান

উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ

ব্রিটিশদের কাছ থেকে উপমহাদেশের স্বাধীনতার জন্য যে আন্দোলন হয় হাজার ১৯৪৭ সালে দারুল উলুম দেওবন তথা কওমি মাদ্রাসার চিন্তাধারার প্রভাব ছিল অসামান্য। মুসলমানদের সক্রিয়ভাবে নিজের ভূমি উদ্ধারের জন্য আন্দোলনে দেওবন্দ মাদ্রাসা সচেষ্ট করে তোলে।

অনেক বিখ্যাত বিখ্যাত আলেম ওলামা এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। এমনকি ১৯৪৭ সালে ভারত এবং পাকিস্তান ভেঙ্গে যে দুই রাষ্ট্র গঠিত হয় তার পিছনেও অনেক বড় বড় কওমি মাদ্রাসার চিন্তাধারার আলেম ওলামাদের অবদান ছিল।

সমাজ সংস্কারে

সমাজ সংস্কারের কওমি মাদ্রাসার ভূমিকা অসামান্য। মুসলমানদের ইমান-আকিদা পুনরুজ্জীবনে এই চিন্তাধারার মাদ্রাসার আছে অসামান্য অবদান।

তাবলিগ

কওমি ধারার মাদ্রাসার দাওয়াতি শাখা বলা যায় তাবলীগকে। দাওয়াত-তাবলীগ এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষ দ্বীনের দাওয়াত গ্রহণ করেছে এবং দ্বীনের পথে এসেছে।

পাঠশালা সফট এবং কওমি মাদ্রাসা

পাঠশালা সফট কওমি মাদ্রাসার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছে। এই সফটওয়ারের মাধ্যমে যদি কওমি মাদ্রাসাগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে তবে তাদের অনেক সুবিধা হবে।

যেমন তারা খুব দ্রুততার সাথে তাদের অনেক কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করতে পারবে। যেমন রেজাল্ট প্রকাশ করা বা ডিজিটের অ্যাটেনডেন্স রেকর্ড করা বা তথ্য নথিভুক্ত করা বা বেতন গ্রহণ করা বা অনলাইনে ভর্তি এসব কাজ করা যাবে সফটওয়ারের সাহায্যে।

সফটওয়্যার অত্যন্ত নির্ভরতার সাথে কার কাজ করে। ফলে এই সফটওয়ারের সাথে করা কাজগুলোতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

এই সফটওয়্যার কর্মচারী নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করবে যার ফলে কওমি মাদ্রাসাগুলো তাদের অনেক অর্থ বাঁচাতে পারবে।

সুতরাং বলা যায় যে পাঠশালা সফটওয়্যার কবে মাদ্রাসার কার্যক্রম গুলোকে আরো আধুনিকায়নের সহায়তা করবে।

পাঠশালার সফটওয়্যার কিভাবে কাজ করে তা জানার জন্য আপনি পাঠশালা সফটওয়্যার এর ডেমো ট্রাই করে দেখতে পারেন। পাশাপাশি আপনি যদি পাঠশালার সফটওয়্যার নিতে আগ্রহী হন তবে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

পাঠশালা সফট